Natore-Kontho24
নাটোর কন্ঠ ২৪
নাটোরের খবর
নাটোর নাগরিক কন্ঠ
শতবর্ষী অন্ধ মাকে রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে গেছেন তারই ছোট ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে। পাঁচ সন্তানের মা হলেও ফেলা যাওয়া তারা বানুর দায়িত্ব নিয়েছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) জেলা প্রশাসক বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, তিন ছেলের নিজস্ব বাড়ি ও জমিজমা থাকার পরও তারা কেউ মায়ের দায়িত্ব না নিলে অন্ধ তারা বানু পাশের গ্রামে তার বড় মেয়ে রায়লা বেগমের বাড়িতে থাকতেন। বড় মেয়ে-জামাই তার বয়স্ক ভাতার টাকা দেয়ায় রেগে যান ছোট দুই ছেলে ও বড় ছেলের ঘরের দুই নাতি। সবাই বয়স্ক ভাতার সমান ভাগ পেতে পর্যায়ক্রমে মাকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। অক্টোবর মাসে বৃদ্ধা ছিলেন ছোট ছেলে আজাদের সংসারে। নভেম্বর মাসের দুই তারিখ পার হয়ে গেলেও বড় ছেলে মাকে নিতে না যাওয়ায় বুধবার রাতে আজাদ তার অন্ধ মাকে রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে যান।
পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জোর করে তার বড় ছেলে মানিকের বাড়িতে তাকে দিয়ে আসলে বৃদ্ধাকে রাতে বাড়ির গোয়াল ঘরে থাকতে দেয়া হয়। এমন খবর পেয়ে বৃদ্ধার দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
শামীম আহমেদ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হাবিবকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধার কাছে পাঠিয়ে তাকে তার মেয়ের বাড়িতে রেখে খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। এছাড়াও নগদ ৫ হাজার টাকা সহায়তা এবং শীতের কাপড়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে বৃদ্ধাকে সহায়তার ব্যবস্থা করেছেন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ
জেলা প্রশাসক ঢাকা পোস্টকে জানান, শতবর্ষী বৃদ্ধ মাকে রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে রেখে যাওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়ার পরে শুক্রবার সকালে সহকারি কমিশনার (ভূমি) জোবায়ের হাবিবের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার নিকট নগদ ৫ হাজার টাকা ও শীতের কাপড় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া বৃদ্ধার জন্য প্রতিমাসে খাওয়া-পড়া বাবদ প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ছেলেরা ওই বৃদ্ধার দায়িত্ব না নেওয়ায় এবং যেহেতু বৃদ্ধা তার মেয়ের কাছে থাকতে চান সেজন্য তাকে দেখভালের জন্য মেয়ে রায়লা বেগমের কাছে রাখা হয়েছে। এখন থেকে মেয়ে সে মায়ের দেখাশোনা করবেন।
এছাড়াও তিনি শুক্রবার ( ৪ নভেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, 'শতবর্ষী অন্ধ তারা বানুকে তার সন্তানেরা রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে দেয়। জেলা প্রশাসন, নাটোর আন্তরিকতার সাথে এই মায়ের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিদের যারা সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছেন।'
এসময় অনেকেই কমেন্টের মাধ্যমে ডিসির এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়।
তাপস কুমার/আরকে
©Dhakapost.com