বুধবার, ২৫ মে, ২০২২

বিদ্যালয়ের গাছ থেকে আম পাড়ায় শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা

Natore-Kontho24 নাটোর কন্ঠ ২৪ নাটোরের খবর নাটোর নাগরিক কন্ঠ #রাজশাহী 


বিদ্যালয়ের গাছ থেকে আম পাড়ায় শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা




বিদ্যালয়ের গাছ থেকে আম পেড়ে খাওয়ার অপরাধে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মায়ের সামনেই এক শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা করা হয়েছে। ২১ মে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পালপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। যিনি জুতাপেটা করেছেন, তিনি ওই বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক।

আজ বুধবার ওই জুতাপেটার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কথা বলার জন্য মা ও ছেলেকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয়ের মাঠে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী দাঁড়িয়ে আছে। আম পাড়ার বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হচ্ছে। এর মধ্যেই এক ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে নিজের পায়ের জুতা খুলে এক শিক্ষার্থীকে পেটাতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে ওই শিক্ষার্থীর মা–ও ছিলেন। তিনি ছেলেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তারপরও ওই শিক্ষার্থীকে ক্ষুব্ধ ব্যক্তি পেটাতেই থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুতাপেটা করা ওই ব্যক্তির নাম মো. কামরুজ্জামান। তিনি ওই বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কামরুজ্জামান আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেরা এসে বলছিল যে ওই ছেলে তিনটা আম পেড়েছে। শুনে আমি ওর কাছে গিয়ে বলেছি, তুমি তিনটা কেন, ১০টা আম খেতে পারো, শিক্ষকদের বলে খাবে। তখন সে আমাকে উত্তর দেয়, “আম খাব, তা বলে খেতে হবে? আপনারা আম পেড়ে যখন খান, তখন বলে খান?” এ কথা শুনে আমি ওকে ভয় দেখানোর একটা খড়ি হাতে তুলেছি। ওটা দেখেই আমাকে বলছে, “স্যার আমাকে মারলে আপনার অসুবিধা আছে।” এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসে ওকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য কলার ধরতে গিয়ে কাদার মধ্যে লুটিয়ে পড়েন। এটা দেখে আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমি পায়ের জুতা নয়, স্যান্ডেল খুলে মেরেছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিবেশী জানান, যে শিক্ষক মেরেছেন, তিনি আওয়ামী লীগ করেন। আর তাঁর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের আরেকটি গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেছে। তাঁরাই ছেলে ও তার মাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।

কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার পরদিন বসে বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছেন। তাঁর খারাপ লেগেছে। তিনি অনুতপ্ত হয়েছেন। ওই ছেলের মা নিজেই মীমাংসার সময় বলেছেন যে তাঁদেরই ভুল হয়েছে। ওই ছেলেও বেয়াদবির জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আজ হঠাৎ সেই ভিডিওটা কে যেন ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে। এই নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ডেকে উভয় পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীর আচরণও খারাপ ছিল। ওর সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রধান শিক্ষক মাঠের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য ওকে দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ানো হয়েছে। পরে আলাদা করে শিক্ষকদের নিয়ে বসে তিনি বলেছেন, একজন ভালো শিক্ষক হতে হলে ভালো বাবা হতে হবে। এভাবে শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা ঠিক হয়নি। তিনি শিক্ষকদেরও তিরস্কার করেছেন।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জানে আলম বলেন, আজই তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছেন। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীটির মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য একজন প্রতিবেশীকে তাঁদের বাড়িতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত মা ও ছেলেকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিবেশী জানান, যে শিক্ষক মেরেছেন, তিনি আওয়ামী লীগ করেন। আর তাঁর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের আরেকটি গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেছে। তাঁরাই ছেলে ও তার মাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। 
Copy- প্রথম আলো 

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.